কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? এই প্রশ্নটির উত্তর আপেক্ষিক। কেননা একই ধরনের কাজ কারো কাছে প্রশান্তিদায়ক হতে পারে, আবার কারো কাছে বিরক্তির কারণ হতে পারে। যাইহোক আপনি যেহেতু জানতে চেয়েছেন, কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? তাই নিচে এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে তুলে ধরা হবে। চলুন দেখে নেয়া যাক কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়?

পেজ সূচিপত্র: কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়?

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তর শুধু আপনি না অনেকেই খুঁজে চলেছেন। আপনি যদি একজন ধার্মিক ব্যক্তি হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? এ প্রশ্নের উত্তর হলো আপনাকে সৃষ্টিকর্তার বিধি-বিধান গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। আপনি যদি মনে প্রানে মহান আল্লাহ তায়ালার বিধি-বিধানগুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে মানসিকভাবে শান্তি পাবেন। 
আপনার মনে যদি প্রশান্তি না থাকে সে ক্ষেত্রে কোন জায়গাতে গিয়েই আপনি প্রশান্তি খুঁজে পাবেন না কেননা পৃথিবীতে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে গেলে ভালো লাগে। তাই মানসিক প্রশান্তি হলেও সম্পূর্ণ মনের ব্যাপার কেউ নুন ভাত খেয়ে তৃপ্তি লাভ করতে পারে, আবার কেউ কোর্মা পোলাও খেয়েও পরিতৃপ্ত হয় না। সুতরাং শান্তি পাওয়ার সম্পূর্ণ মানসিক বিষয়।

কি করলে পৃথিবীতে শান্তি পাওয়া যায়

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? তাই তোমাদের উপরে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে আর্টিকেলটিতে, কি করলে পৃথিবীতে শান্তি পাওয়া যায়? সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক, কি করলে পৃথিবীতে শান্তি পাওয়া যায়। যে সকল কাজ করলে মনে প্রশান্তি আসে সেই কাজগুলোর তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো।

  • সকালে উঠে প্রার্থনা করেন এবং হালকা ব্যায়াম করুন: সকলের শুরুটা যদি হয় আনন্দদায়ক তবে আপনার পুরো দিনটি ভালো কাটবে। তাই নিজেকে একটি সুন্দর সকাল উপহার দিন, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমান এবং সকালে তাড়াতাড়ি উঠুন, সবার সাথে ভালো ব্যবহার করুন। আপনার দিনটি ভালো কাটবে।
  • নিজের শরীরের যত্ন নিন: শরীর ঠিক না থাকলে মনে কখনোই শান্তি আসবে না।আর তাই সবসময় নিজের শরীরের যত্ন নিন। শরীর হচ্ছে আমাদের কাছের একটা বন্ধু, এটা ভেবে তার যত্ন নিন।
  • সমালোচনা পরোয়া না করে নিজের কাজ করুন: আমাদের অসফলতার সবচেয়ে বড় একটি কারণ অন্যের কথায় কান দেওয়া। সমাজে এক প্রকার মানুষ থাকে যাদের কাজ অন্যের সম্পর্কে সমলোচনা করা। আপনি কোনো কোথায় কান না দিয়ে নিজের কাজ করতে থাকুন। নিজের উপরে বিশ্বাস রাখুন।
  • আপনার কর্তব্য কে ভালোবাসুন: প্রত্যেকটি কাজকে আনন্দের সহিত করার চেষ্টা করুন। যখন আপনি প্রত্যেকটা জার্নি এনজয় করবেন আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ আগের থেকে দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।
  • বন্ধুদের সাথে কিছুটা সময় কাটান: চলার পথে আমাদের বিপদ আপদের সঙ্গী হচ্ছে বন্ধু। বন্ধু ছাড়া জীবন চলেনা বলা যায়। আপনি কত ব্যস্ত থাকুন না কেন, চেষ্টা করবো কিছুটা সময় বের করে বন্ধুদের সাথে কাটানোর। দেখবেন আপনার জীবনে হাসি খুশি থাকার এটা একটা কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
  • অপরকে সাহায্য করুন: মানুষকে সাহায্য করুন সবসময়। তবে নিজের সবকিছু দিয়ে নয়। আপনার যা সামর্থ্য সেটা দিয়ে অন্যকে সাহায্য করুন। আপনার টাকা যা থাকলে শ্রম দিয়ে সাহায্য করুন। অন্যকে সাহায্য করার মধ্যে এক প্রকারের সুখ আপনি খুঁজে পাবেন।
  • ব্যায়াম করুন: ব্যায়াম আমাদের শরীর এবং মন ভালো রাখে। তাই দৈনিক কিছুটা সময় ধ্যান এবং ব্যায়াম এর দিকে দিন।
  • নামাজ পড়ুন: সকল কাজের মাঝে সময়মত সালাত আদায় করুন। তাহরে আল্লাহ তায়ালাই শান্তিময় জীবন দান করবে।

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। নিচে দুনিয়াতে সবচেয়ে শান্তির স্থান কোনটি? তা উল্লেখ করা হবে। আশা করছি এই বিষয়গুলো আপনাকে পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তি এনে দিতে না পারলেও অন্তত আপনার দিনগুলোকে হাসিখুশি রাখবে। মনে রাখবেন এই পৃথিবীতে কেউ সবদিক থেকে হাসি খুশি থাকতে পারে না, সকলের জীবনে কোননা কোনো বেদনা থাকেই।

দুনিয়াতে সবচেয়ে শান্তির স্থান

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? উপরে তুলে ধরা হয়েছে। এখনে দুনিয়াতে সবচেয়ে শান্তির স্থান? সে প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা হবে। পৃথিবীতে সবচেয়ে শান্তির স্থান হলো, মসজিদ। যেখানে আসলে সকলেই শান্তি অনুভব করে। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো: মসজিদে আসলে ঘুম ধরা। শুক্রবারে পবিত্র জুম্মার দিন যখন আমরা মসজিদে যাই তখন দেখতে পাই অনেকেই মসজিদে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। মানুষ যখন প্রশান্তি লাভ করে, ঠিক তখনই কিন্তু তারা যখন ধরে থাকে যেহেতু মসজিদে আগুন ধরে ধরে নেয়া যায় যে মসজিদে আসতে মানুষ প্রশান্তি লাভ করে। 

মসজিদ আল্লাহতায়ালার নিকট সবচেয়ে উৎকৃষ্ট জায়গা এ ব্যাপারে হাদীসে বলা হয়েছে, মসজিদ আল্লাহতায়ালার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা এবং দিনরাত তার রহমত নাজিলের ক্ষেত্র। হাদিসে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় স্থান মসজিদ আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্থান বাজার।’ -সহিহ মুসলিম: ৬৭১
উপরোক্ত হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, মসজিদের সঙ্গে মুমিন-মুসলমানের কেমন সম্পর্ক থাকা উচিত এবং সেটা তার জন্য কী পরিমাণ উপকারী ও কল্যাণকর। বস্তুত মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন আত্মিক প্রশান্তি লাভ, আল্লাহতায়ালার নৈকট্য অর্জন ও ঈমান-আমল উন্নত করার এক পবিত্র ও বরকতময় উপায়। সুতরাং প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য হলো- মসজিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং একে জ্ঞান ও আলো, হেদায়েত ও সফলতার কেন্দ্র মনে করা। 

হজরত ইবনে উমর [রা.] বলেন; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল সন্ধ্যায় নিয়মিত এ দোয়াটি পড়তেন। কখনো তা ছাড়তেন না। - আবু দাউদ-৫০৭৬ ইবনে মাজাহ-৩৮৭১ ফজিলত: হজরত ইবনে উমর (রা:) বলেন; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল সন্ধ্যায় নিয়মিত এ দোয়াটি পড়তেন। কখনো তা ছাড়তেন না। আবু দাউদ-৫০৭৬ ইবনে মাজাহ-৩৮৭১

মানসিক শান্তি লাভের দোয়া

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তর উপরে তুলে ধরা হয়েছে। নিচে মানসিক শান্তি লাভের দোয়া উল্লেখ করা হবে। যে দোয়া পাঠ করলে মনে প্রশান্তি আসে সেগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। চলুন দেখে নেয়া যাক, মানসিক শান্তি লাভের দোয়া। দোয়া নিম্নবর্ণিত দোয়া করা নিয়মিত পাঠ করার মাধ্যমে আশাকরি আপনি মানসিক প্রশান্তি লাভ করতে পারবেন। 

হজরত ইবনে উমর (রাঃ) বলেন; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল সন্ধ্যায় নিয়মিত এ দোয়াটি পড়তেন। কখনো তা ছাড়তেন না। - আবু দাউদ-৫০৭৬ ইবনে মাজাহ-৩৮৭১ ফজিলত: হজরত ইবনে উমর (রা.) বলেন; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল সন্ধ্যায় নিয়মিত এ দোয়াটি পড়তেন। কখনো তা ছাড়তেন না। (আবু দাউদ-৫০৭৬ ইবনে মাজাহ-৩৮৭১) 

মানসিক শান্তি লাভের দোয়া:  
اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَ الْعَافِيَةَ فِى الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِى دِينِى وَدُنْيَاىَ وَأَهْلِى وَمَالِى اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِى وَآمِنْ رَوْعَاتِى اللَّهُمَّ احْفَظْنِى مِنْ بَيْنِ يَدَىَّ وَمِنْ خَلْفِى وَعَنْ يَمِينِى وَعَنْ شِمَالِى وَمِنْ فَوْقِى وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِى.
মানসিক শান্তি লাভের দোয়া বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতি ফিদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাতি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতি ফি দিনি ওয়া দুনিয়াই ওয়া আহলি ওয়া মালি। আল্লাহুম্মাজতুর আওরাতি ওয়া আমিন রাওয়াতি। আল্লাহুম্মাহ ফিজনি মিনবাইনি ইয়াদাই ওয়া মিন খলফি ওয়া আন ইয়ামিনি ওয়ান শিমালি ওয়া মিন ফাওকি। আউজু বিআজমাতিকা মিন বুখালি।
মানসিক শান্তি লাভের দোয়া অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই এবং দুনিয়া ও আখেরাতে প্রশান্তি চাই। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই এবং আমার দীন, আমার দুনিয়া, আমার পরিবার পরিজন এবং আমার ধন-সম্পদের ব্যাপারে প্রশান্তি চাই। হে আল্লাহ! আমার সব গোপন দোষগুলোকে তুমি ঢেকে রাখ, এবং আমার সব ভয়ের স্থানে তুমি আমাকে নিরাপত্তা দান কর। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সামনে পেছনে ডানে বামে ও উপরে সর্বদিক দিয়ে রক্ষা কর। হে আল্লাহ! তোমার বড়ত্ব ও মহত্ত্বের উসিলায় আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই, আমি যেনো আমার নিচের দিক দিয়ে মাটিতে দেবে না যাই।

কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়?: শেষ কথা

আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনি এতক্ষণে জেনেছেন যে, কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? কেননা, কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? সে প্রশ্নের উত্তর এ আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কি করলে পৃথিবীতে শান্তি পাওয়া যায় এবং কি করলে পৃথিবীতে শান্তি পাওয়া যায়, সে বিষয়গুলো সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দুনিয়াতে সবচেয়ে শান্তির স্থান কোনটি এবং মানসিক শান্তি লাভের দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url