নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | নিম পাতার ব্যবহার ও খাওয়ার নিয়ম
সূচি নির্দেশনা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
বহুবিধ ভেষজ গুনে গুণান্বিত নিমপাতা। প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতা বিভিন্ন রোগের কার্যকর ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শুধু তাই নয় ধারণা করা হয়, বসতবাড়ির আশেপাশে যদি নিম পাতা থাকে তাহলে সেই বাড়িতে রোগবালাই কম হয়।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে, নিম পাতার আপাদমস্তক ভেষজ গুণসম্পন্ন। এমনকি নিম গাছের পাতার প্রবাহিত বায়ুও। যাইহোক, নিম পাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে। নিম পাতার যাবতীয় উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে নীচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে।
এর পাশাপাশি নিম পাতার যে সকল অপকারিতা রয়েছে, সেই বিষয়গুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
নিম পাতার উপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত আলোচনার এই অংশে নিম পাতার উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান সেক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়লে আশা করি আপনি নিম পাতার উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। তো আসুন দেখে নেয়া যাক, নিম পাতার উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
- নিম পাতা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সমৃদ্ধ।
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
- মুখ গব্বরের রোগ দূর করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- রক্তে সুগারের মাত্রা কমায়।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- নিম পাতা সংক্রমণ প্রতিরোধী।
- পোকামাকড়ের কামড়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- লিভার ভালো রাখে।
- বার্ধক্যের ছাপ কমায়।
- হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
- ওজন কমাতে সহায়তা করে।
- শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে।
- শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোধ করে।
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটির এই অংশে নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সমূহ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। নিম পাতার অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। সেই অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে জানতে চাইলে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো পড়ুন।
- অতিরিক্ত পরিমাণে নিমপাতা খেলে বা ব্যবহার করলে এলার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
- নিম পাতা খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা বাড়তে পারে।
- নিম পাতা ব্যবহার করলে বা খেলে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যায়।
- গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে নিম পাতা ব্যবহার করলে ত্বকে ফুস্কুরি উঠতে পারে।
নিম পাতার ব্যবহার
বিভিন্নভাবে নিম পাতা ব্যবহার করা যায়। সাধারণত যে সকল উপায়ে নিমপাতা ব্যবহার করা যায় সেই উপায়গুলো নিচে তুলে ধরা হলো। নিম্ন বর্ণিত উপায়সমূহ অবলম্বন করে খুব সহজেই আপনি নিমপাতা ব্যবহার করতে পারবেন। তো আসুন জেনে নেয়া যাক, নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
- নিমপাতা ডুবানো পানি: নিমপাতা ব্যবহার করার সবথেকে সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি হলো নিমপাতা ডুবানো পানি ব্যবহার করা। অর্থাৎ পানিতে নিমপাতা দিয়ে তার সেদ্ধ করে সেই পানি ব্যবহার করলে অধিক উপকার পাওয়া যায়।
- নিম পাতার পেস্ট: নিমপাতা ব্যবহার করার আরেকটি কার্যকর উপায় হলো পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করা। বিশেষ করে ত্বকের যত্নে পেস্ট আকারেই নিমপাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই চাইলে আপনি নিমপাতা দিয়ে পেস্ট তৈরি করে তা ব্যবহার করতে পারেন।
- নিম পাতার তেল: যে সকল উপায়ে নিমপাতা ব্যবহার করা যায়, তার মধ্য থেকে অন্যতম আরেকটি উপায় হলো নিম পাতার তেল। আপনি যদি নিম পাতার তেল ক্রয় করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ভেষজ ঔষধের দোকানে যোগাযোগ করতে হবে।
আরো পড়ুন: কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
- নিম পাতার ক্যাপসুল: বর্তমানে অনেক কোম্পানি নিম পাতার ক্যাপসুল তৈরি করে থাকে। তাই চাইলে আপনি সরাসরি নিমপাতার ক্যাপসুল খেয়ে উপকৃত হতে পারবেন। ভেষজ ঔষধের দোকানগুলোতে সাধারণত নিম পাতার ক্যাপসুল পাওয়া যায়।
- নিম পাতার পাউডার: আপনি যদি দীর্ঘদিন নিম পাতা ব্যবহার করতে চান বা খেতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনাকে নিম পাতার পাউডার ব্যবহার করতে হবে। কেননা নিম পাতার পাউডার বহুদিন পর্যন্ত অক্ষুন্ন থাকে।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটির এই অংশে ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা করা হবে। তাই আপনি যদি ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান তাহলে পড়তে থাকুন।
ব্রণ দূর করার জন্য নিম পাতা খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি সঠিক নিয়মে নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই ব্রণ দূর করতে পারবেন। আপনি যদি নিমপাতা ব্যবহার করে ব্রণ দূর করতে চান, তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে কাঁচা নিমপাতা বেটে নিতে হবে।
এরপর গোসল করার পূর্বে নিম পাতার পেস্ট মুখে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে। এরপর আপনাকে ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে নিয়মিত কিছুদিনের যদি আপনি নিম পাতা ব্যবহার করেন, আশা করা যায় খুব দ্রুত ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
চুলকানি বা এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার
চুলকানি বা এলার্জিজনিত সমস্যা দূর করার কার্যকর ঔষধ হিসেবে বহু পূর্বে থেকেই নিম পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চুলকানি বা এলার্জি দূর করার জন্য নিয়মিত কিছুদিন সঠিক নিয়মে নিমপাতা ব্যবহার করলে অভূতপূর্ব ফলাফল পাওয়া যায়।
নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। তো আসুন দেখে নেয়া যাক, নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম।
আপনি যদি নিমপাতা খেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে নিমপাতা শুকিয়ে গুড়ো করে নিতে হবে। এরপরে সেই নিম পাতার গুঁড়ো দিয়ে চা বানিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিম পাতার গুঁড়ো দিয়ে চা বানিয়ে খেলে আপনি অধিক উপকৃত হতে পারবেন।
বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করার ক্ষেত্রে নিম পাতার চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি দূর করার ক্ষেত্রে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এবং হার্ট সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত নিম পাতার চা খেতে পারেন।