মাশাআল্লাহ অর্থ কি? | মাশাআল্লাহ এর জবাব কি?

বিভিন্ন সময়ে আমরা 'মাশাআল্লাহ' শব্দটি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা মাশাআল্লাহ অর্থ কি? বা মাশাআল্লাহ কখন বলতে হয়? নিচে মাশাআল্লাহ অর্থ কি? এবং মাশাআল্লাহ এর জবাব কি? বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? তা তুলে ধরা হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ মাশাআল্লাহ অর্থ কি? |  মাশাআল্লাহ এর জবাব কি?

মাশাআল্লাহ অর্থ কি? |  মাশাআল্লাহ এর জবাব কি?: উপস্থাপনা

আমরা হরহামেশাই 'মাশাআল্লাহ' শব্দটি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু মাশাআল্লাহ অর্থ কি তা যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে দেখা যাবে অধিকাংশ লোক সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না। যেহেতু আমরা 'মাশা আল্লাহ' শব্দটি ব্যবহার করি তাই মাশাআল্লাহ অর্থ কি? তা জানা আমাদের জন্য একান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

আবার অনেকেই জেনে না জেনে না বুঝে না বুঝে মাশাআল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করে। আসল এই শব্দটির ব্যবহার সঠিক জায়গাতেই করতে হবে। কেননা সব জায়গাতেই সবসময় এ শব্দটি ব্যবহার করার কোনো মানে হয় না।

আমরা যদি মাশাআল্লাহ অর্থ কি? তা না জানি এবং এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে ধারনা রাখনা রাখি তাহলে আমরা কখনোই এই শব্দটির সঠিক ব্যবহার করতে পারব না। পাশাপাশি 'মাশাআল্লাহ' বললে কি বলতে হয় অর্থাৎ মাশাআল্লাহ এর জবাব কি? বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? তা জানাও জরুরি বিষয়।

নিচে মাশাআল্লাহ অর্থ কি?,  মাশাআল্লাহ এর জবাব কি?  বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক নিচে মাশাআল্লাহ অর্থ কি? মাশাআল্লাহ এর জবাব কি? বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? 

মাশাআল্লাহ অর্থ কি?

মাশাআল্লাহ ( مَا شَاءَ ٱللّٰهْ) এ শব্দটি মূলত আরবি ভাষার একটি শব্দ। এই শব্দটির অর্থ হলোঃ আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন বা আল্লাহ যা চান। 'মাশাআল্লাহ' শব্দটি খুবই সুন্দর এবং সুন্দর অর্থবহ একটি শব্দ। যা নমনীয়তা বা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অন্যতম একটি মাধ্যম। 

আপনি যদি বলেন 'মাশাআল্লাহ তুমি কত বড় হয়ে গিয়েছো'। তাহলে এই বাক্যটি হলো এমন একটি বাক্য যার মাধ্যমে আপনি আল্লাহ তায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। পক্ষান্তরে যদি আপনি শুধু এইটুকু বলেন যে 'বাহ তুমি অনেক বড় হয়ে গিয়েছো'। তাহলে এই বাক্যটির মাধ্যমে কিন্তু আপনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন না। যদিও উভয় বাক্যের অর্থ একই।
মহান আল্লাহ তা'আলা মুসলমানদের সকল কাজের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ও সুন্দর পন্থা বাতলে দিয়েছেন। কখনো কখনো ওহির মাধ্যমে তিনি মুসলমানদেরকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। আবার কখনও কখনও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর মাধ্যমে অর্থাৎ বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর ব্যবহার এবং এর দৈনন্দিন জীবনের কাজ কর্মের মাধ্যমে মুসলিমদেরকে শিক্ষা দিয়ে গেছেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম আদর্শ।

তাই মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কথাবার্তা থেকে শুরু করে সব কিছুর মধ্যেই একটি শালীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। কেউ যদি ইসলাম এ বর্ণিত জীবনধারা পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ করতে পারে তাহলে তার জীবনটা হয়ে উঠবে চমৎকার এবং আনন্দময়। মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত হলো ইসলামের ছোটখাটো বিষয় গুলো সহ সব বিষয়ে পালন করার চেষ্টা করা। 

কথায়, কাজে সবকিছুতেই শালীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো মুসলিম হিসেবে আমাদের একান্ত কর্তব্য। আমরা যদি এই আদর্শ গুলো সঠিক ভাবে গ্রহণ করতে পারি তাহলে আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো বেড়ে যাবে এবং কোন দ্বন্দ্ব ইত্যাদি পুরোপুরিভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

মাশাআল্লাহ অর্থ কি? | কখন বলতে হয় মাশাআল্লাহ?

অনেকেই মাশাআল্লাহ অর্থ কি?, মাশাআল্লাহ এর জবাব কি?  বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? এবং  মাশাআল্লাহ কখন বলতে হয় এই বিষয়গুলো না জেনেই যখন-তখন মাশাআল্লাহ শব্দটির ব্যবহার করে থাকেন। আসলে এমনটি করা উচিত নয়। মাশাআল্লাহ অর্থ কি? এবং মাশাআল্লাহ এর জবাব কি?  বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এরপরে মাশাআল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করা উচিত। 

কোন কোন ক্ষেত্রে মাশাল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করতে হয় সেই ব্যাপারে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক কখন বলতে হয় মাশাআল্লাহ?

কারো সফলতায়ঃ আপনি যদি দেখতে পান যে আপনার কাছের কোন মানুষ বা পরিচিত কোন লোক সফলতা পেয়েছে তাহলে আপনি 'মাশাআল্লাহ' শব্দটি ব্যবহার করার মাধ্যমে তাকে উদবুদ্ধ করতে পারেন। যেমন আপনি বলতে পারেন 'মাশাআল্লাহ তোমার তোমার কোম্পানি দিন দিন উন্নত হচ্ছে'।
কিন্তু অনেকেই এই ধরনের শব্দ ব্যাবহার না করে বিভিন্ন ধরনের শব্দ ব্যবহার করে থাকে, যেগুলো ব্যবহার করা মোটেও উচিত নয়। যেমন কেউ কেউ ব্যবহার করে হুররে, ওয়াও ইত্যাদি শব্দগুলো।শব্দগুলো ব্যবহার করার মাঝে কোন ধরনের শালীনতা নেই।

আপনি যদি মাশাআল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই সেই বাক্যটি অনেকটা নমনীয় হয় এবং এতে করে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। সে কারণেই 'মাশাআল্লাহ' শব্দ ব্যবহার করা মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য অন্য কোন শব্দ নয়। 

দৃষ্টিনন্দন কিছু দেখতে পেলেঃ আপনি যদি খুবই সুন্দর কোন কিছু দেখতে পান তাহলে সেক্ষেত্রে মাশাআল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন। যেমন আপনি দেখতে পেলেন যে আপনার আত্মীয়ের বা পরিচিত কারো সন্তান ছোট থেকে বড় হয়েছে এবং দেখতে সুন্দর হয়েছে সেক্ষেত্রে আপনি বলতে পারেন ' মাশাআল্লাহ আপনার সন্তান অনেক বড় ও সুন্দর হয়েছে'।

কাউকে ভাল কিছু করতে দেখলেঃ কাউকে ভাল কিছু করতে দেখলে তাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আপনি মাশাল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন। যেমন কেউ গরিব-দুঃখীদের কে টাকা পয়সা দান করে আপনি তাকে এভাবে বলতে পারেন যে, ' মাশাআল্লাহ আপনি গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করছেন এতে আপনি অনেক সাওয়াবের অধিকারী হবেন'

এভাবে 'মাশাআল্লাহ' শব্দ ব্যবহার করে আপনি যদি কাউকে সম্বোধন করেন, সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তিও যেমন উদ্ভূত হয় ঠিক তেমনি ভাবে আপনার কথার ভিতরে শালীনতা প্রকাশ পায় এবং মার্জিত ভাব বজায় থাকে। আর এ কারনেই আপনি উপরোক্ত বিষয়গুলোতে 'মাশাআল্লাহ' বাক্যটি ব্যবহার করতে পারেন। 

মাশাআল্লাহ অর্থ কি? | মাশাআল্লাহ এর জবাব কি? | মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি?

ইতোপূর্বে আমরা মাশাআল্লাহ অর্থ কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব মাশাআল্লাহ এর জবাব কি? বা  বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? সেই বিষয় সম্পর্কে। যদি কেউ আপনাকে এমন কোন কিছু বলে যেখানে 'মাশাআল্লাহ' শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে। যেমনঃ ' মাশাল্লাহ আপনি অনেক সম্পদশালী হয়েছেন' সেক্ষেত্রে আপনাকে বলতে হবে 'আলহামদুলিল্লাহ'  সবই আল্লাহর ইচ্ছা। 
অর্থাৎ কেউ যদি আপনাকে 'মাশাল্লাহ' বলে কোন কাজ করার জন্য ধন্যবাদ দেয় বা উদ্বুদ্ধ করে, সেক্ষেত্রে আপনি শালীনতা বজায় রাখার জন্য এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নিমিত্তে 'আলহামদুলিল্লাহ' শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে 'জাযাকাল্লাহু খাইরান' এ শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন। 

কেননা 'আলহামদুলিল্লাহ' শব্দের অর্থ হলোঃ সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য। আর 'জাযাকাল্লাহু খাইরান' শব্দের অর্থ হলোঃ আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। অর্থাৎ ভালো কথার জবাব আপনি ভালো কথার মাধ্যমেই দিবেন এটাই হচ্ছে শালীনতা।

মাশাআল্লাহ অর্থ কি? |  মাশাআল্লাহ এর জবাব কি?: উপসংহার

মাশাআল্লাহ অর্থ কি? মাশাআল্লাহ কখন বলতে হয় এবং মাশাআল্লাহ এর জবাব কি? বা  বা মাশাআল্লাহ এর উত্তর কি? এই ব্যাপারে উপরে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি 'মাশাআল্লাহ' শব্দটি সঠিকভাবে ব্যবহার করেন তাহলে আপনি ইসলামের একটি কালচার অনুসরণ করলেন।

পক্ষান্তরে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের শব্দ ব্যবহার করে থাকে যেগুলো ইসলামিক কোন শব্দ নয়। আর মুসলিম হিসেবে আমাদের অনৈসলামিক কোন শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করা উচিত নয়। যেহেতু আমরা মুসলমান তাই আমাদের উচিত হলো তাদের নিজস্ব কালচার গুলো সমাজের মাঝে ফুটিয়ে তোলা।

কোন ব্যক্তি যদি ইসলামের সকল বিষয়গুলো অর্থাৎ খুঁটিনাটি যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো যদি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুসরণ করার চেষ্টা করে তাহলে সে খুবই সুন্দর একটি জীবন যাপন করতে পারবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url