গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না?
সাধারণভাবে গর্ভাবস্থায় ফলমূল খাওয়া উপকারী। কিন্তু এমন কিছু ফল রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় কখনোই খাওয়া যাবেনা। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না বা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পেজ সূচিপত্র: গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না?
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না: উপস্থাপনা
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: পেঁপে
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: আনারস
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: তেঁতুল
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: তরমুজ
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: ক্যানড টমেটো
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: খেজুর
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: কলা
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না: শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না: উপস্থাপনা
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদের কে অনেক সাবধান থাকতে হয়। কেননা সামান্য ভুলের কারণে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে খুবই সাবধান থাকতে হয় এই সময়টিতে।
এমন কিছু খাবার বা ফল রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে তা আপনার নিজের জন্য এবং গর্ভস্থ সন্তানের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেই খাবারগুলো অবশ্যই আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না বা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না সে বিষয় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না
কিছু কিছু ফল রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেই ফলগুলো খাওয়া থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে। কিন্তু আপনি যদি না জানেন যে, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না বা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত নয় তাহলে কিন্তু আপনি আপনার অজান্তেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা
তাই অবশ্যই আপনার উচিত গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না বা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত নয়। নিচে যে সকল ফলের কথা উল্লেখ করা হবে। আপনি ভুল করেও কখনো গর্ভাবস্থায় সেই ফলগুলো খাবে না। চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না তার তালিকা।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: পেঁপে
গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়া আপনার জন্য নিরাপদ নয়। কেননা, পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ল্যাটেক্স।যা গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি করতে পারে, এমনকি পেঁপে খাওয়ার কারণে অপনার গর্ভপাতও হয়ে যেতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় অবশ্যই আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। পেঁপে কাঁচা বা পাকা যাই হোক না কেন তা না খাওয়াই ভালো।
অনেক সময় না জানার কারণে অনেকেই পেঁপে বা এ জাতীয় ফল খেয়ে থাকেন, যার ফলে দেখা যায় পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার তৈরি হয়। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে আপনাকে অবশ্যই পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: আনারস
আনারস খাওয়া সাধারণভাবে উপকারী হলেও গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া উচিত নয়। আনারসের রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্রোমেলাইন। যা জরায়ুপথকে নরম করে দেয়। এর ফলে আপনার পেটে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি গর্ভস্থ বাচ্চার গর্ভপাতও হয়ে যেতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় কোন ভাবেই আপনার উচিত হবে না আনারস খাওয়া।
তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া পরিহার করবেন এবং ভুলেও আনারস খাবেন না। সামান্য ভুলের কারণে হয়ে যেতে পারে বড় ধরনের সমস্যা তাই সাবধান থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে প্রথম তিন মাস কোনভাবেই আনারস খাওয়া উচিত হবে না।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: তেঁতুল
টক জাতীয় ফল হওয়ার কারণে নারীরা সাধারণত তেঁতুল খেতে খুবই পছন্দ করে এবং তেতুল দেখলেই তাদের জিভে জল চলে আসে। তবে গর্ভাবস্থায় অধিক পরিমাণে তেতুল খাওয়া খুবই ক্ষতির কারণ হতে পারে। অনেক গর্ভবতী নারীদের কে দেখা যায় যে, তারা গর্ভাবস্থায় তাদের বমি বমি ভাব দূর করার জন্য অধিক পরিমাণে তেতুলে খেয়ে থাকেন। কখনো এমনটি করবেন না।
কেননা অধিক পরিমাণে তেতুল খেলে তা আপনার গর্ভস্থ সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা প্রোজেস্টেরনের উৎপাদনকে দমন করতে পারে, আশঙ্কাজনক মাত্রায় প্রোজেস্টেরন কমে গেলে তা আপনার গর্ভস্থ সন্তানের জন্য খুবই ক্ষতিকারক এমনকি অকাল গর্ভপাতও হতে পারে।
তাই অবশ্যই আপনার নিজেকে সংযত রাখতে হবে এবং তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে প্রথম তিন মাস কোনভাবেই তেঁতুল খাওয়া যাবেনা। প্রথম তিন মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সে সময়ে অল্প সমস্যার কারণেও গর্ভপাত ঘটে যেতে পারে তাই অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: তরমুজ
সাধারণভাবে তরমুজ খাওয়া ক্ষতিকর কোনো বিষয় নয় বরঞ্চ সঠিক মাত্রায় তরমুজ খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকার এবং ডিহাইড্রেশন সহ যাবতীয় পানি শূন্যতা পূরণ করতে তরমুজ খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
কিন্তু গর্ভবতী অবস্থায় অধিক পরিমাণ তরমুজ খেলে তা গর্ভস্থ সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।কেননা, তরমুজের আমাকে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, গর্ভাবস্থায় যদি আপনি অধিক পরিমাণে তরমুজ খান তাহলে তরমুজে থাকা সেই উপাদানগুলো আপনার গর্ভস্থ বাচ্চাকে টক্সিনের সংস্পর্শে আনতে পারে যা ভ্রুনের জন্য ক্ষতিকারক।
তাছাড়া অধিক পরিমাণে তরমুজ খেলে তরমুজে থাকা চিনিযুক্ত উপাদানগুলো আপনার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে বারবার প্রস্রাব করতে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে অধিক পরিমাণে তরমুজ খেলে।
তরমুজ যেহেতু ঠাণ্ডাজাতীয় একটি ফল তাই অধিক পরিমাণে তরমুজ খেলে আপনার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে যা গর্ভস্থ বাচ্চার জন্য ক্ষতির কারণ। সুতরাং আপনি গর্ভাবস্থায় অধিক পরিমাণে তরমুজ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: ক্যানড টমেটো
শুধু ক্যান্ডি টমেটো নয় গর্ভাবস্থায় টিন জাত যেকোনো ধরনের খাদ্য এড়িয়ে চলা আপনার এবং আপনার গর্ভস্থ সন্তানের জন্য খুবই উপকারী। কেননা টিনজাত খাদ্য গুলোতে বা ফলগুলোতে অধিক পরিমাণে প্রিজারভেটিভ থাকে যা আপনার গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য সকল খাদ্য বা ফলে প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয় সেই খাদ্য বা ফলগুলো এড়িয়ে চলাই আপনার জন্য কল্যাণকর।
তাই আপনি গর্ভাবস্থায় কখনোই টিনজাত কোন খাবার খাবেন না এবং প্রিজারভেটিভ যুক্ত কোন ফল খাবেন না। কেননা এতে করে আপনার এবং আপনার গর্ভস্থ সন্তানের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই অবশ্যই আপনাকে সাবধান থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: খেজুর
খেজুর খুবই পুষ্টিগুণসম্পন্ন একটি ফল হলেও গর্ভাবস্থায় অধিক পরিমাণে খেজুর খেলে তা আপনার এবং আপনার ভ্রুনের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবে অল্প পরিমাণে খেজুর খাওয়া যেতে পারে। তবে আপনি যদি অধিক পরিমাণে খেজুর খান তাহলে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ যা আপনার শরীরকে উত্তপ্ত করে তুলতে পারে এবং জরায়ুর পেশিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে জরায়ুকে সংকোচন করে দিতে পারে। আর জরায়ু সংকোচনের কারণে আপনার গর্ভস্থ সন্তান গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। তাই খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে খেজুর খেতে পারেন এতে সমস্যা নেই তবে কখনোই বেশিমাত্রায় খেজুর খাবেন না।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না: কলা
কলা খুবই কমন একটি ফল যা আমরা সকলেই কম বেশি খেয়ে থাকি। কিন্তু গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার ব্যাপারে আপনাকে অবশ্যই সাবধান হতে হবে। বিশেষ করে আপনার যদি ডায়াবেটিস বা অ্যালার্জি জনিত কোন সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার পূর্বে আপনাকে ভাবতে হবে।
আরো পড়ুন: প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ - কনফেটি বিডি
কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিটিনেস যা ল্যাটেক্স জাতীয় উপাদান। আর লাটেক্স জাতীয় উপাদান হচ্ছে অ্যালার্জেন। তাই এটি শরীরের উত্তাপ বাড়িয়ে তোলে। আর এ কারনেই আপনি যদি গর্ভাবস্থায় অধিক পরিমাণে কলা খান সেক্ষেত্রে তা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না: শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না বা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত নয় আশা করি তা বুঝতে পেরেছেন। উপরে যে সকল ফলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে গর্ভাবস্থায় কখনোই এই ফলগুলো খাওয়া আপনার জন্য উচিত হবেনা। তাই উপরে উল্লেখিত ফলগুলো গর্ভাবস্থায় অবশ্যই পরিহার করবেন।
সামান্য অসাবধানতার কারণে আপনার এবং আপনার গর্ভস্থ সন্তানের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই খাবারের ব্যাপারে অবশ্যই আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না বা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না সেই বিষয়গুলো জেনে অবশ্যই তা অনুসরণ করা আপনার একান্ত কর্তব্য।