মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম | মাসিক সম্পর্কিত ১৫ টি প্রশ্নোত্তর

প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে মেয়েদের স্বাভাবিকভাবেই মাসিক ঋতুস্রাব হয় থাকে। অনেক সময় মাসিক সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই সেই সমস্যা গুলো কারো সাথে শেয়ার না করে, নিজে নিজে দুশ্চিন্তা করে থাকে। আসলে এমনটি করা কখনোই উচিত নয়। মাসিক সংক্রান্ত কোনো সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই তা অভিভাবকের সাথে শেয়ার করা উচিত। যাই হোক, নিচে মাসিক সংক্রান্ত ১৫ টি প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা হবে।
পেজ সূচিপত্র
মাসিক সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর শুরু করার পূর্বে একটি বিষয় আপনাদেরকে জানিয়ে রাখা জরুরি। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কখনোই নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে কোন ঔষধ ক্রয় করে সেবন করবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন করলে যে কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। আপনি এই আর্টিকেলটি থেকে ধারণা নিতে পারেন তবে কখনোই এই আর্টিকেলে বর্ণিত ঔষধ গুলো নিজে নিজে ব্যবহার করবেন না। যেকোনো ধরনের ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। 

মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম কি?

অনেক সময় দেখা যায় সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরেও নিয়মিত মাসিক হয় না। সবকিছু ঠিক থাকার পরেও যদি নিয়মিত মাসিক না হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে অর্থাৎ মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট সেবন করতেই হবে। নিচে বেশ কিছু মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম তুলে ধরা হলো। মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম সমূহ নিম্নরূপ?


মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম হলো: 
  • Menogia - মেনোজিয়া
  • Norcolut - নরকোলাট
  • Norestin - নরেস্টিন
  • Menoral - মেনোরাল
  • Mensil N - মেনসিল এন
  • Remens - রেমেনস
  • Normens - নরমেন্স
  • Ethinor - ইথিনর
  • Noteron - নোটেরন
  • Feminor - ফেমিনর

মাসিক সম্পর্কিত ১৫ টি প্রশ্নোত্তর

- অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায়

মাসিক যদি অনিয়মিত হয় সেক্ষেত্রে অনেক সময় বাচ্চা ধারণ করতে সমস্যা হতে পারে। তাই বাচ্চা ধারণ করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে অনিয়মিত মাসের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে মাসিক নিয়মিত হলেও বাচ্চা ধরনের কোন সমস্যা হয় না। নিয়মিত দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করার পরেও যদি বাচ্চা ধারণা হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

- মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়?

সাধারণত মাসিক মিস হওয়ার ১৫ দিন পরে টেস্ট করলে প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়। তবে যদি নেগেটিভ রেজাল্ট আসে তাহলে এক সপ্তাহ পরে আবার পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। 

- মাসিক না হওয়ার কারণ?

বিভিন্ন কারণবশত মাসিক না হতে পারে। তবে সাধারণত প্রেগন্যান্ট হলে মাসিক বন্ধ থাকে।স্থায়ীভাবে মাসিক বন্ধু হওয়ার কারণ হলো: মেনোপজ। অর্থাৎ নারীদের বয়স যখন ৪৫ থেকে ৫৫ বছর হয়ে যায় তখন প্রাকৃতিকভাবেই তাদের মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। আর এটাকে বলা হয় মেনোপজ। 

- পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ?

অনেক সময় দেখা যায়, পিল খাওয়ার পরেও মাসিক হয় না। এর কারণ হলো যদি কখনো কোন কারনে আপনি পর পর দুই বা তিন দিন পিল খেতে ভুলে যান সে ক্ষেত্রে, গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর সে কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 

- অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ?

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো হরমোন জনিত সমস্যা। আরমান জনিত কোন সমস্যা থাকলে অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিলে অবশ্যই আপনার উচিত হবে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা। 

- অনিয়মিত মাসিকের ঔষধ?

বিভিন্ন কারণবশত মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। মাসিক দীর্ঘদিন অনিয়মিত হলে অবশ্যই আপনাকে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে নিম্ন বর্ণিত ঔষধ গুলো সেবন করতে পারেন। 

অনিয়মিত মাসিকের ঔষধ সমূহ: 
  • রেমেনস
  • নরমেন্স
  • ইথিনর
  • নোটেরন
  • ফেমিনর
  • মেনোজিয়া
  • নরকোলাট
  • নরেস্টিন
  • মেনোরাল
  • মেনসিল এন

- দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ?

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওয়া। আপনি যদি প্রেগন্যান্ট হয়ে যান সে ক্ষেত্রে কিন্তু বাচ্চা প্রসব হওয়ার আগ পর্যন্ত মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ থাকবে। তবে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার পরেও যদি নেগেটিভ রেজাল্ট আসে এবং মাসিক নিয়মিত না হয়, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

- মাসিক হওয়ার দোয়া

পবিত্র কুরআনে কিংবা হাদিসের নির্দিষ্টভাবে মাসিক হওয়ার কোন দোয়া নেই। তবে অসুস্থ হলে যে দোয়া পড়তে হয় আপনি মাসিক না হলে সেই দোয়া পড়তে পারেন কেননা মাসিক অনিয়মিত থাকা ও এক ধরনের রোগ। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে মাসিক হওয়ার দোয়া হলো: আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি মুজহিবাল বা’সি, ইশফি আনতাশ-শাফি, লা শাফি ইল্লা আনতা শিফায়ান লা য়ুগাদিরু সুকমা।
অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী; আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো রোগ অবশিষ্ট না থাকে।
মাসিক হওয়ার আরেকটি দোয়া হলো:
اللَّهمَّ إنِّي أسألُكَ وأتوجَّهُ إليكَ بنبيِّكَ محمدٍ صَلَّى اللَّهُ عليْهِ وعلى آلهِ وسلَّمَ نبيِّ الرحمةِ ، يا محمدُ إنِّي أتوجَّهُ بكَ إلى ربِّي في حاجَتي هذه فتَقضى، وتُشفعُني فيه وتشفعُهُ فيَّ 

বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ওয়া আতাওয়াজ্জাহু ইলাইকা বিনাবিয়্যিকা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যির রহমাতি ইন্নি তাওয়াজ্জাহতু বিকা ইলা রব্বি ফি হাজাতি হাজিহি লিতুকদ্বা লি, আল্লাহুম্মা ফাশাফফি’হু ফিয়্যা।

বাংলা অনুবাদ: হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি প্রার্থনা করি এবং তোমার প্রতি মনোনিবেশ করি তোমার নবী, দয়ার নবী মুহাম্মদ (সা.) এর (দোয়ার) মাধ্যমে। আমি তোমার দিকে ঝুঁকে পড়লাম, আমার প্রয়োজনের জন্য আমার প্রভুর দিকে ধাবিত হলাম, যাতে আমার এ প্রয়োজন পূর্ণ করে দেওয়া হয়। হে আল্লাহ! আমার প্রসঙ্গে তুমি তাঁর সুপারিশ কবুল করো।

- মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?

অবশ্যই বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাসিক না হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হলো প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওয়া। তাই মাসিক হওয়ার নির্ধারিত সময় পার হওয়ার ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করে নেওয়া উচিত। প্রেগনেন্সি টেস্ট করলে খুব সহজে বুঝতে পারবেন যে আপনি সন্তান সম্ভবা কিনা।

১০ - মাসিক বন্ধ হওয়ার লক্ষণ

মাসিক বন্ধ হওয়ার লক্ষণ সমূহ হলো:
  • পেলভিক ব্যথা হাওয়া।
  • মুখে ব্রণ হওয়া।
  • মাসিক ঋতুস্রাবের চক্র ৩৫ দিনের অধিক সময়ে ধরে দীর্ঘায়িত হওয়া
  • চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেওয়া।
  • মাথাব্যথা
  • দৃষ্টি কমে যাওয়া
  • মুখের অতিরিক্ত চুল গজানো
  • একটানা ৩টির বেশি মাসিক চক্র অনুপস্থিত
  • জমাট বা দাগ সহ ভারী রক্তপাত
  • পেটে ব্যথা এবং পিঠে ব্যথা

১১ - গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয়?

সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার পরে মাসিক ঋতুস্রাব হয়না। তবে যদি কোন কারনে গর্ভবতী হওয়ার পরেও মাসিক ঋতুস্রাব দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতেই হবে।

১২ - মাসিক বন্ধ হলে কি করতে হবে?

আপনার বয়স যদি ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে হয়ে থাকে, তাহলে মাসিক বন্ধ হলে আপনাকে কিছুই করতে হবে না। কেননা প্রাকৃতিকভাবেই ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, যেটাকে মেনোপজ বলা হয়।
কিন্তু আপনার বয়স যদি মেনোপজ হওয়ার উপযুক্ত না হয় অর্থাৎ আপনার বয়স যদি ৪০ বছর এর নিচে হয় এবং আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

১৩ - মাসিক বন্ধ করার উপায়?

অনেক সময় দেখা যায় মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাব অবিরাম চলতে থাকে বন্ধ হয় না। নির্দিষ্ট সময়ের পরেও যদি মাসিকরিত স্রাব বন্ধ না হয়, সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। কেননা নির্দিষ্ট সময়ের পরেও মাসিক চলতে থাকা অস্বাভাবিক। যা কোন রোগের কারণে হয়ে থাকতে পারে। তাই যত শীঘ্র সম্ভব গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

১৪ - মাসিক হওয়ার প্রাকৃতিক উপায়

প্রাপ্তবয়স্ক হলে প্রাকৃতিকভাবেই একজন মেয়ের মাসিক শুরু হয়। তবে মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পরে হওয়ার পরে যদি তা অনিয়মিত হয় কিংবা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে নিশ্চয়ই সেটা কোন সমস্যার কারণেই হয়ে থাকতে পারে। 
লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার মাধ্যমে স্বাভাবিক সমস্যাগুলো দূরীভূত হতে পারে। কিন্তু যদি অবস্থা যদি এলাকার ধারণ করে এবং লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার পরেও মাসিক ঋতুস্রাব স্বাভাবিক না হয় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

১৫ - সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয়

সহবাস করার পরে যদি নিয়ন্ত্রণ আশীকৃত শ্রাবণ না হয় তাহলে ধরে নিতে পারেন যে আপনি গর্ভবতী হয়েছেন। তাই সহবাসের পরে মাসিক ঋতুস্রাব না হলে অবশ্যই আপনাকে চেকআপ করতে হবে যে আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কিনা। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url